সাপ্তাহিক গণিত চিন্তা – ০০১, এর সমাধান

প্রশ্ন?

সমাধান-

মিতু আর লিটু একটা একটা করে ফুল হাতে নিচ্ছে আর দেখছে।। কোন ফুল দেখতে বেশি সুন্দর, কোন ফুলের রঙ বেশি ভাল লাগছে, কোন ফুল এর গন্ধ অনেক, কোন ফুল এর দেখতে ভালো হলেও একটু ও গন্ধ নাই বা গন্ধটা বেশি ভালো না আবার কোনো ফুল দেখতে বেশি ভালো না হলেও গন্ধ কি দারুণ। এই সব নিয়ে আলোচনা করতে করতে কিছু সময় পর লিটু মিতুকে বলল……

লিটু: এই এখানে কতো গুলো ফুল আছেরে?

মিতু: ইস আমি তো গুণতে ভুলে গিয়েছিলাম ফুল গুলো তোর ঘর থেকে তুলার সময়। এই বলেই সে গুনতে শুরু করেদিলো। ১,২,৩……..

লিটু: আরে আরে করছিস কি?

মিতু: কতো গুলো আছে গুনছি।

লিটু: ধুর বোকা এটা তো না গুনেও বলা যায়। তুই না বললি ১০৫৭ বার লাফ দেবার পর থেমে গিয়েছিলি?

মিতু: হুম, তাতে কি?

লিটু: আরে এটা দিয়েই বের করা যাবে।

মিতু: সেটা কি ভাবে?

লিটু: আচ্ছা যেহেতু আমারা ০ সংখ্যা থেকে শুরু করেছিলাম, সেখান থেকে ৫ ঘর পর পর লাফ দিলে ১০৫৭ বারে কতো সংখ্যা হয় বলতে পারবি?

মিতু: হ্যাঁ।। অপেক্ষা কর বলছি ৫,১০,১৫,২০….।। ধুর এই ভাবে গুনতে তো অনেক সময় লাগবেরে লিটু।

লিটু: আরে তুই তো একটা ছাগল। এটাতো সহজ হিসাব তুই গুণ করেই বের করতে পারিস। যেহেতু তুই ৫ ঘর পর পর লাফ দিয়েছিস সেহেতু ৫ এর সাথে কত বার লাফ দিয়েছিস সেটা গুণ কর।

মিতু: “মিতু মুখ বেকিয়ে গুণ করে বলল”,  ৫ x ১০৫৭ = ৫২৮৫। এতো সময়ে কতো গুলো ফুল আছে এখানে সব আমি গুনে ফেলতে পারতাম।

লিটু: হুম কিন্তু যদি ফুল এর সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতো তাহলেতো অনেক সময় লাগতো তাই না?

মিতু: হুম বুঝেছি। আচ্ছা এর পর কি?

লিটু: এরপর আমাদের জানতে হবে তুই প্রথম কোন ঘর থেকে ফুল তুলেছিলি।

মিতু: এটা আমার মনে নাই, তাহলে কি এটা বের করা সম্ভব?

লিটু: হ্যাঁ সম্ভব। তুই ভালো মতো লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারতি যে, আমরা যেই ভাবে লাফ দিতে দিতে আগিয়েছি সেটা ৫ এবং ৭ এর গুণিতক এর  মতো। 

মিতু: ও আচ্ছা তার মানে আমি প্রথম তোর ৩৫ নাম্বার ঘর থকে ফুল নিয়েছি।

৫ = ৫,১০,১৫,২০,২৫,৩০,৩৫,৪০
৭ = ৭,১৪,২১,২৮,৩৫,৪২

এই যে এই ভাবে।। ৩৫ সংখ্যা প্রথম মিলে।।

লিটু: হ্যাঁ, এটাই আমার এবং তোর  (৭ এবং ৫ ) সব চেয়ে ছোট সমাধাণ গুণিতক বা ল.সা.গু।

মিতু: ইস ল.সা.গু করে এটা বের করা যায়  একটুও মাথায় আসে নি। ৫২৮৫ এর মধ্যে যত গুলো গুনিতক আছে ৫ এবং ৭ এর, এই গুলো লিখলেই আমরা তাদের মধ্যের সাধারণ গুণিতক গুলো পেয়ে যাবো। কিন্তু নিশ্চয় এর চেয়ে ভালো কোনো সমাধান আছে?

লিটু: আচ্ছা যেহেতু ৩৫ আমাদের দুই জনের সাধারণ বা একই ঘর, তাহলে সেখান থেকে যদি আবার আমরা ৫ এবং ৭ ঘর পর পর সামনে যেতে থাকি তাহলে আবার ৩৫ ঘর পর ৭০ সংখ্যার ঘর আমাদের সাধারণ ঘর হবে। তাহলে এখন কত গুলো ৩৫ আছে ৫২৮৫ এর মধ্যে এটা বের করতে পারলেই কাজ শেষ। মিতু বলতো কতো গুলো ৩৫ আছে?

মিতু: মিতু একটু চিন্তা করে ৩৫ এর ঘর এর নামটা পড়তে শুরু করলো।

৩৫ x ১ = ৩৫

৩৫ x ২ = ৭০

৩৫ x ৩ = ১০৫

লিটু: তার নামতা পড়া শুনে হাসতে হাসতে বললো, “আমি জানি তুই অন্য সব বিষয় আমার থেকে ভালো বুঝিস কিন্তু অংক করতে এসে তুই এতো গাধার মতো ভাবিস কেন”? তুই গুণ না করে সরাসরি ৫২৮৫ কে ৩৫ দিয়ে ভাগ করে দিলেই তো হয়।

মিতু: সত্যি আমি সংখ্যা জগতের কলঙ্ক। হুম, ৫২৮৫ কে ৩৫ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ১৫১ আর ভাগ শেষ হয় ০। 

লিটু: আচ্ছা তারমানে তুই শেষ যেই ঘর থেকে লাফ দিতে গিয়ে পরে গিয়েছিলি সেই ঘর থেকেও ফুল নিয়েছিলি। কি তাই না?

মিতু: হ্যাঁ, নিয়েছিলাম। তুই কি করে বুজলি।

লিটু: যেহেতু ৫২৮৫ কে ৩৫ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষ ০ হলো, সেহেতু সহজেই বুঝাযাচ্ছে যে ৫ এবং ৭ এর সাধারণ গুণিতক ৫২৮৫। তুই যদি আর এক ঘর বেশি লাফ দিতি পারতিস তাহলেই  ভাগশেষ আসত।

মিতু: কি সব বলছিস আমার মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে।

লিটু: আচ্ছা এটা সমাধান এর জন্য ভাগশেষ নিয়ে ভাবার কোনো দরকার নাই আমাদের। তাহলে আমরা ১৫১ পেলাম ভাগ করে।

মিতু: হ্যাঁ, তাহলে আমি ১৫১ টা ঘর থেকে ২ টা করে ফুল তুলেছি। তাহলে ১৫১ x ২ = ৩০২। 

লিটু: হ্যাঁ, ৩০২ টাই ফুল আছে এখানে। বিশ্বাস না হলে গুনে দেখতে পারিস।

প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে আকাশে সুন্দর চাঁদ উঠেছে। মিতু আকাশ এর দিকে তাকিয়ে থাকতে বললো এতো কষ্ট করে অংক করার কোনোই দরকার ছিল না। লিটুও বললো আমারও তাই মনে হচ্ছে। ?

অংক:

১। (১০৫৭ x ৫) ÷ (৫,৭ এর ল.সা.গু)
২। ভাগ করে যা বের হয়েছে তার ভাগফল এর সাথে গুণ ২।

আচ্ছা যদি মিতু শুধু ৫৭ বার লাফ দিয়ে থেমে যেতো তাহলে উত্তর কি হতো?